ভোল পাল্টিয়ে সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে শ্রমিকদের উস্কানি
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মদ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর রাব্বিক হাসান'র বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের বিস্তার অভিযোগ উঠেছে,। তিনি ভোল পাল্টিয়ে দুর্নীতি অনিয়ম জায়েজ করার চেষ্টা করছেন। তিনি সহ স্বৈরাচারী সরকারের দোসদের কাছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অসহায় হয়ে পড়েছেন। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দুর্নীতিবাজ ও তাদের দোসরদের অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও মীর রাব্বিক হাসান বগুড়ার সন্তান পরিচয়ে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। জানা গেছে, দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মদ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) লিমিটেড এখন অনিয়ম, প্রশাসনিক কর্তৃত্বের অপব্যবহারের নানা অভিযোগই উঠেছে মীর রাব্বিকের বিরুদ্ধে। তার একচ্ছত্র আধিপত্য ও অদৃশ্য শক্তির কাছে জিম্মি সৎ কর্মচারী-কর্মকর্তাগণ। সেখানে ডিএনসিকে তোয়াক্কা না করেই চালিয়ে যাচ্ছে দেশী মদ বোতলজাতকরণ। এ ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অ্যালকোহল বিধিমালাকে কোন পাত্তাই দিচ্ছেন না রাব্বিক হাসান। দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করছেন, তার এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্র। সম্প্রতি ১শ’ এবং ৫শ’ এমএল বোতলজাতকরণের ক্ষেত্রে ডিএনসি হতে পেশীশক্তি ব্যবহার করে কান্ট্রি স্পিরিট বা দেশী মদ বোতলজাতকরণের অনুমোদন নেওয়া হলেও বোটলিং লাইসেন্স নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর রাব্বিক হাসানের প্রত্যক্ষ নির্দেশে গত প্রায় এক বছরে ধরে অবৈধ ভাবে মদের বোতলজাতকরণ হচ্ছে। আর কেরুতে মদের বোতলজাতকরণে ব্যবহৃত নতুন মেশিনের অনুমোদন ছিল শুধুমাত্র পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য। কিন্তু গত ২০২৩ সালে এক বছর মেয়াদের জন্য পরীক্ষামূলক উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই শর্ত ভেঙে নিয়মিতভা বে বাণিজ্যিক ভাবে মদ বোতলজাত করা হচ্ছে, যা সরাসরি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিধি লঙ্ঘন। অপরদিকে এ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ আইনে রিকশনের মাধ্যমে উচ্চ সুরাশক্তির এ্যালকোহল নিম্ম সূরাশক্তিতে এনে সরবরাহ করতে হলে ডিস্ট্রিলারির আঙ্গিনায় পৃথক বন্ডেড পণ্যাগার স্থাপন করার বিধান থাকলেও কেরু কোম্পানীকে পৃথক একটি দেশী মদের বন্ডেড পণ্যাগার ও পাইকারি বিক্রয়ের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। তবে এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। আবার বোটলিং ফি প্রদানের বিষয়ে বলা হলেও লাইসেন্স প্রদান, গ্রহণ কিংবা পরবর্তী অর্থ বছরে কোন প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স নবায়ন হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। উচ্চ সুরাশক্তির এ্যালকোহল নিম্ম শক্তিতে আনার পর ৩০ থেকে ৪০ ডিগ্রি আন্ডার প্রুফ দেশী মদ বোতলজাত করে সরবরাহের ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক লেভেলের রং ও ব্যাচ সংযুক্ত করতে হবে। তাছাড়া দেশী মদ বোতলজাত করে পণ্যাগারে সরবরাহে কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারের ল্যাবে টেষ্টের রিপোর্টও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দর্শনার ডিস্ট্রিলারী অফিসার পরিদর্শক ছানোয়ার হোসেন কেরুর এসব অমান্য করায় বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বিভিন্ন নির্দেশনা ও পরামর্শ চেয়ে গত ২৮ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন। উক্ত আবেদনের পরই গত ১২ মে ছানোয়ারকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তড়িঘড়ি করে আইনের বেড়াজালকে পাশ কাটিয়ে, নিয়িমনীতি না মেনেই সম্প্রতি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্র দেশী মদ বোতলজাতকরণ কার্যক্রম উদ্ধোধন করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। অপরদিকে কেরুর কৃষিখাতে বড় ধরণের অনিয়ম ধরা পড়েছে। শত শত কৃষকের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমিতে দেওয়া হচ্ছে লোকসানী সবজির বীজ। কেরুর কুমড়া চাষ প্রকল্পে প্রতিবছরই লোকসানে পড়ছেন কৃষকরা। ( এর পর পড়ুন ২য় পর্ব-এ)