logo

সময়: ১০:৪৮, শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫ ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় ফিল্মী ষ্টাইলে আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নিল ফ্যাসিষ্টের দোসর জাসদ নেতা

Shadin Bangla
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১০ মার্চ, ২০২৫ | সময়ঃ ১০:৩৭
photo
ভেড়ামারা আদর্শ কলেজ

 

 শামসুল আলম স্বপন  / ইসমাইল হোসেন বাবু :

 

 

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আর্দশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার ফিল্মী ষ্টাইলে দখলে নিয়েছে ওই কলেজেরই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান।
গত ৯ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কতিপয় ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে কলেজের নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়োগ পাওয়া বৈধ অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জুকে চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে তিনি  ঐ চেয়ার দখল করে নেন। ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই কলেজের গভর্নিং বডির এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফারিহা আক্তারের সহযোগিতায় চেয়ার দখল করেন বলে কলেজে কর্মরত বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক এবং ভেড়ামারার সুশীল সমাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল ভেড়ামারা আর্দশ কলেজের প্রভাষক মিজানুর রহমান মিজান। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ-জাসদ সরকার গঠন করলে তিনি জাসদে যোগদান করেন। পদ পান চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতির। ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ ও জাসদ’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ২০১৪ সালে আর্দশ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেন মিজানুর রহমান।


তৎকালীন সময় থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে রাখেন। গত ৫ অগাষ্ট স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত ১৯ অগাষ্ট বিধি মোতাবেক এবং নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আর্দশ কলেজের অধ্যক্ষ’র দায়িত্ব গ্রহন করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামসুজ্জামান রঞ্জু। এরপর থেকেই তিনি কলেজ কে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে আসছেন।


ঘটনার দিন হঠাৎ করেই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিজান সহ কয়েক জন সন্ত্রাসী নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। এসময় তারা অধ্যক্ষ’র কক্ষে আকষ্মিক ভাবে প্রবেশ করে। এসময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অধ্যক্ষ’ তাঁর চেয়ারে বসে  দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের সাহায্যে জোর পূর্বক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু তার চেয়ার থেকে উঠিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। এরপরই অনিয়ম তান্ত্রিক জোর করে অধ্যক্ষের চেয়ার দখলে নেন, জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজান।

কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অভিযোগ করে বলেন, ১৯ অগাষ্ট বিধি মোতাবেক ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান তিনি । হঠাৎ করেই কোন কারন ছাড়াই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জাসদ নেতা কে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই আমাকে অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে দেয়। এটি একটি চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা। চরম ভাবে অবৈধ।  এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্বদ্যিালয়ের জনৈক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন এ্যাডহক কমিটি কোন ক্ষমতা নেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণ করার । এ ব্যাপারে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে  তিনি জানান । এ বিষয়ে ওই কলেজের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফারিহা আক্তারের বক্তব্য  নেয়ার জন্য  তার ০১৭১১১২০৯১৭ নং এ একাধিকবার যোগযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ দিকে ভেড়ামারা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন,  মিজানুর রহমান মিজান আওয়ামীলীগ  ও জাসদ সরকারের শাসনামলে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। জাসদের গর্ভে লালিত ও আওয়ামীলীগের পৃষ্টপোষকতায় বেড়ে উঠা সে একজন ফ্যাসিবাদের দোসর।

রাজনৈতিক ভাবে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি হিসাবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার মতো একজন চিহ্নিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টা সত্যিই লজ্জাজনক।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ’র চেয়ার জবর দখল করে নেওয়া জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজানের সাথে যোগাযোগ করা হলে , তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ভেড়ামারাতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে । কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা জানিয়েছে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। তারা ফ্যাসিষ্টদের দোসর মিজানুর রহমানের দ্রুত গ্রেফতার দাবি জানিয়েছেন ।

 

  • নিউজ ভিউ 3141