---

শামসুল আলম স্বপন,কুষ্টিয়া :  

কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর সোনার বাংলা সড়ক এলাকায় মৃত, মীর মহিউদ্দিনের বাড়ির নিচ তলায় অভিযান  চালিয়ে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী   মোল্লা মাসুদকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী।

 মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা সড়কের একটি ভাড়া বাসায় সেনাবাহিনী অভিযান চালায়, এ সময় ২টি পিস্তল, ৪ টি ম্যাগাজিন, ১০ রাউন্ড গুলি সহ ঢাকার অপরাধ জগতের এই দুই কুখ্যাত ‍ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ওই ভবনের ভাড়াটিয়া ও আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ বিষয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, আজ আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। হয়তো অন্য কোনো বাহিনী করেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ দুজনকে আটকের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি কে বা কারা, কাকে আটক করেছে। তবে খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনই নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারছি না।

কালীশংকরপুর এলাকার ওই বাসার ভাড়াটিয়া ইভান ও সানজিদুর বলেন, তিনতলা বিশিষ্ট এই ভবনের নিচতলা ফাঁকা ছিল। প্রায় দেড় মাস আগে আমাদের এই বিল্ডিংয়ের পেছনের বাসার মালিকের ছেলে বাসাটি ভাড়া নিয়ে তাদের উঠান। যে দুজন এই বাসাতে থাকতেন । তারা বাসা্ থেকে খুব বেশি বাইরে বেরুতেন না।  তাদের সঙ্গে কারো মেলামেশা করতে দেখিনি। তবে পাশের ভবনের মালিক তার আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তারা ব্যবসা করবে এবং এখানে থাকবে। এরপর থেকেই তারা দুজন এই বাসাতে  থাকতেন।

প্রতিবেশী আব্দুর রশীদ জানান ,আজ ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায়। দরজা ভেঙে তারা ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা পাশের ভবনের মালিকের ছেলের সঙ্গেও কথা বলেন। আমরা জানতে পেরেছি, সুব্রত বাইন নামে একজনকে সহযোগীসহ আটক করা হয়েছে। সুব্রত বাইনের চেহারার সঙ্গে মিল রয়েছে।

ভাড়াটিয়া ও স্থানীয় কয়েকজন বলেন, মঙ্গলবার ভোরে পায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে সেখানে অভিযান চালিয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সব এলাকার  অধিকাংশ বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রীদের মেস ভাড়া দেওয়া হয়। যে বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে, সেটির সামনে পৌরসভার সাইনবোর্ডে বাড়ির মালিকের নাম লেখা মীর মহিউদ্দিন। তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার মেসে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ১৮ /২০জন ছাত্র থাকেন।

কালীশংকরপুর এলাকার ওই বাসার ভাড়াটিয়া শাহীন বলেন, নিচতলায় এই বাড়ির পেছনের বাড়ির এক স্থানীয় বাসিন্দা দেড় মাস আগে ভাড়া নেন। আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এ বাসায় তাদের উঠান। নিচতলায় কী হয় বা কারা থাকেন, তা কখনো দেখেনি আমরা। তবে একজনকে কয়েকদিন দেখেছি, কাপড় রোদে দিচ্ছেন এবং বাইরে থেকে খাবার আনছেন। তার সঙ্গে সুব্রত বাইনের চেহারার মিল রয়েছে। অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েকজন বলেছেন, তিনিই সুব্রত বাইন।

ওই এলাকার বাসিন্দা সলেমান শেখ বলেন , আজ ভোর ৫টার দিকে বাড়ির সামনে সেনাবাহিনীর ৫ থেকে ৬টি গাড়ি আসে। গাড়ির বহরে একটি কালো মাইক্রোবাসও ছিল। প্রায় ৫০ জন সেনা সদস্য বাড়ির তালা খুলতে বলেন। তালা খোলার পর তারা দোতলা ও তিনতলায় ওঠেন। এরপর মেসের সব বাসিন্দাদের একটি কক্ষে রাখেন। এ সময় তারা মেসের ছাত্রদের বলেন, ‘তোমাদের কোনো ভয় বা সমস্যা নাই। তোমরা বসে থাকো। এখানে অভিযান চলছে।’ শেয়ার করুন