: শামসুল আলম স্বপন :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা । আশ্রয় নেন তার চিরমিত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ।
প্রধানমন্ত্রী থাকতে শেখ হাসিনা প্রায়শ বলতেন “ভারতকে যা দিয়েছে ভারত তা চিরদিন মনে রাখবে ”। ক্ষমতা হারা হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর শেখ হাসিনা সপ্তাহ খানেক চুপ-চাপ ছিলেন। এর পর এক অডিও বার্তায় মিনিটে ৬০ বার আপা বলা এক কর্মীকে বলেন- আমি দেশের কাছাকাছি আছি তোমরা প্রস্তুত থাকো যে কোন মুহুর্তে আমি চট করে দেশে ডুকে পড়বো ।
আর যাই কই শুরু হয় ধরপাকড় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের। এর পর কখনো অডিও বার্তায় আবার কখনো ভিডিও বার্তায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে উস্কানিমুলক বার্তা দিয়ে বলছেন- যারা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে-বাড়ি-ঘর লুটপাট করছে,আগুন দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে তাদের হত্যা করো,তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দাও । বিএনপি- জামায়াত- বৈষম্য বিরোধীছাত্র ও যে সকল পুলিশ সদস্য আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করছে তাদের তালিকা তৈরী করে রাখো । কাওকে ছাড় দেয়া হবে না। আমি যা বলি তাই করি । আমি তো আছিই । আমি তো পদত্যাগ করিনি আমি এখনো সাংবিধিানিক প্রধানমন্ত্রী । আমি শিঘ্রই দেশে ফিরে আসবো । এমন বক্তব্য দিয়েই শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের ঠেলে দিচ্ছে বিপদের মুখে । হাসিনার ঠোট সমস্যার কারণেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক বাড়িটি আজ ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছে।
শেখ হাসিনা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের উজ্জিবিত করার জন্য যতবার উষ্কানিমুলক এমন বক্তব্য রেখেছেন ততবারই নির্যাতনের শিকার হয়েছে আওয়ামীলীগের নিরীহ নেতা-কর্মীরা। স্বৈারাচারের আমলে যারা মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে,লুটপাট করেছে তারা অধিকাংশই ক্ষমতা হারানোর আগে ও পরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এখন যারা দেশে আছে তাদের অধিকাংশই নিরপরাধ আওয়ামী নেতা-কর্মী । শেখ হাসিনার উষ্কানিমুলক বক্তব্যে তারা হচ্ছে নির্যাতনের শিকার। হচ্ছে গ্রেফতার । অর্থনৈতিক সমস্যায় তারা জর্জরিত। ৫ আগষ্টের পর ১০ হাজারেও বেশী নেতা-কর্মী হয়েছে গ্রেফতার বলে শোনা যাচ্ছে । নেতা-কর্মীরা এখন অতিষ্ঠ । তারা শেখ হাসিনার ফাঁকা আওয়াজ যেমন বিশ্বাস করছে না তেমন চাচ্ছে না এমন ফাঁকা আওয়াজ দিক শেখ হাসিনা । তারা মনে করছে শেখ হাসিনাই এখন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের বড় শত্রু ।
এ প্রসঙ্গে ভানু বন্দপ্যাধায়ের একটি কৌতুক মনে পড়ে গেলো - ভানু উকিল, তার মক্কেল বললো ভানু দা আমার তো ফাঁসির আদেশ হয়ে গেছে আমি এখন কি করবো । ভানু বললো- চিন্তা করিস না ফাঁসির দড়ি গলায় পরিয়ে ঝুলে পড় আমি তো আছিই ।