মন্তব্য প্রতিবেদন : যে কারণে বারবার ব্যর্থ হয় চিরুনি অভিযান !

নিউজ ডেস্ক | shadinbangla.news
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২৫
Shadin Bangla
চিরুনি অভিযান

: শামসুল আলম স্বপন 

 

অমানবিক ভাবে সোহাগ  হত্যার পর নড়ে চড়ে বসেছে সরকার । আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত রবিবার থেকেই সারা দেশে একযোগে চিরুনি অভিযান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী । চিরুনি অভিযানে  যৌথবাহিনী এ্যাকশন নিবেন চরমপন্থী, সন্ত্রাসী,জঙ্গি,চাঁদাবাজ, চোরাচালানী,  ছিনতাইকারী, খুনি, ধর্ষক, চোর –ডাকাতসহ সকল প্রকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন অপরাধীকে দেখা মাত্র গুলি করা হবে।

 

১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কালিদাসপুরে একটি জনসভায় বক্তব্যরত অবস্থায় চরমপন্থীগ্রুপ লালটু বাহিনীর  ব্রাশফায়ারে  নিহত হন জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদসহ কুষ্টিয়ার ৫ জাসদ নেতা। এই মর্মান্তিক লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের পর তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার নড়ে চড়ে বসেন । দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভয়াবহ  চরমপন্থী, সন্ত্রাসী,জঙ্গিদের নির্মুলে কম্বিং অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়।    তবে কম্বিং অপারেশনের  আগে আত্মসমর্পনের  ‍সুযোগ দেয়া হয় । যশোর ,কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় লালটু বাহিনী,সিরাজবাহিনী, লাট্টু বাহিনীসহ বাঘা বাঘা চরমপন্থী, সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ প্রায় ৫ হাজার জন আত্মসমর্পন করেন।

 

সে সময় সরকার ঘোষণা দিয়েছিলেন যারা আত্মসমর্পন করবে তাদের অতীতের মামলা গুলো প্রত্যাহার করা হবে এবং তাদের আনসার বিভাগে চাকরি দেয়াসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে অনেককে চাকরি দেয়া হয়েছিল মামলাও প্রত্যাহার করা হয়েছিল । কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতে তারা চাকরি ছেড়ে পুনরায় ফিরে আসে পুরনো পেশায় (!) ।

 

কিন্তু কেন ?  এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যেয়ে বেরিয়ে পড়ে ভংয়কর তথ্য।

 

২০০২ সালের দিকে ঢাকার মোহাম্মদ পুরের একটি বাসায় কসাই সিরাজের সাথে দেখা হলে প্রশ্ন করেছিলাম  সরকার সবরকম সুযোগ-সুবিধা দেয়া পরও কেন আপনারা আবার আন্ডার গ্রাউন্ডে ফিরে এলেন । অস্ত্রই বা পাচ্ছেন কোথায় ? জবাবে তিনি বল্লেন, সরকারের দেয়া চাকরির টাকায় কি আমাদের পোশায় ? চিঠি দিলে যেখানে লাখ লাখ টাকা পাওয়া যায় সেখানে আনসার বাহিনীতে চাকরি করে মাস গেলে কয়েক হাজার টাকা বেতন তাতে কি সংসার চলে। তা ছাড়া মন্ত্রীদের সম্মানের চেয়ে আমাদের ক্ষমতা কম কোথায় ? যে বাড়িতে শেল্টার থাকি তারাতো জামাই আদরে রাখে। তিনি বল্লেন সারেন্ডার করার সময় ভাংগা-চুরা অস্ত্র জমা দিয়েছিলাম । তা ছাড়া  বাংলাদেশে যতদিন পুলিশ বিভাগ থাকবে তত দিন আমাদের অস্ত্র  ও গুলি বারুদের কোন অভাব হবে না। অসাধু পুলিশ টাকার বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে থাকে। এ  ছাড়া প্রতিবেশী দেশ তো আছেই । তাদের চোরাকারবারিরা অস্ত্র বেচার জন্য নানা কৌশল ব্যবহার করে আমাদের দেশের অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে।  সরকার  যত অভিযানই চালানোর চেষ্টা করুক না কেন অসাধু পুলিশের কারণে আমরা সব সময় নিরাপদে থাকি। কারণ আগে থেকে আমরা জেনে যাই কোথায় কখন অপারেশন হবে । বিনিময়ে তারাও আমাদের কাছ থেকে আর্থীক সুবিধা পায়। 

 

বলুন এই যদি অবস্থা হয় তাহলে অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্লক রেইড, কম্বিং অপারেশন, ক্লিন হার্ট , কিংবা চিরুনি অভিযান চালিয়ে কি ফল হবে ?