কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাতিয়া গ্রামে রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শিপন বিশ্বাসের দুই বিঘা মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মাছ বিনষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৯ জুন) সকাল ৭টার দিকে হাতিয়া গ্রামের রাখালগাছি এলাকায়। শিপন বিশ্বাস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কুষ্টিয়া সদর উপজেলা শাখার সম্মানিত সদস্য এবং একজন ব্যবসায়ী। এলাকায় তার দীর্ঘদিনের সামাজিক প্রভাব রয়েছে।
পুকুর পরিচালনাকারী আলমগীর হোসেন জানান, বহুদিন ধরে চলা রাজনৈতিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা ঘটিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মী এই ঘটনার সাথে জড়িত।
তিনি আরও জানান, এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিহাব পারভেজের নেতৃত্বাধীন একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—শাজাহানের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা শাহীন আক্তার মানিক, মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ও সাবেক ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক, মৃত বকুল বিশ্বাসের ছেলে উজ্জ্বল বিশ্বাস, শফি বিশ্বাসের ছেলে শিহাব, মৃত তক্কেল বিশ্বাসের ছেলে অতিল, আমিরুল খানের ছেলে মিয়াজী, এবং জাকের বিশ্বাসের ছেলে হাকিমসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই রাকিব বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পরবর্তীতে অফিসিয়াল বক্তব্য প্রদান করা হবে।”
এ বিষয়ে কামার প্রজেক্ট মালিক শহিদুজ্জামান শিপন বলেন,
“আমি একজন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করে আসছি। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার সামাজিক অবস্থান ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বারবার আমার ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করছে। এ ঘটনার মাধ্যমে তারা শুধু আমার অর্থনৈতিক ক্ষতিই করেনি, বরং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
আমার পুকুরে যারা বিষ দিয়েছে, তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ক্ষতি করতে চেয়েছে। এই পুকুরে আমি বহু টাকা বিনিয়োগ করেছি, হাজার হাজার মাছ ছিল, সব শেষ হয়ে গেছে। আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত আইনি পদক্ষেপের দাবি জানাই।”
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দ্রুত বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত একটি রাজনৈতিক প্রতিশোধ। এলাকায় যাতে আরও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সচেতন মহল।