জেলা প্রশাসনের শোভাযাত্রায় হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি আওয়ামীলীগ নেতা অংশ নেয়ায় সমালোচনার ঝড়

নিউজ ডেস্ক | shadinbangla.news
আপডেট : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
Shadin Bangla
জেলা প্রশাসনের শোভাযাত্রা

স্বাধীনবাংলা নিউজ :

 

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার  এজাহারভুক্ত আসামিক অংশ নেয়ায় কুষ্টিয়ায় তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে । । আজ ১লা বৈশাখ সোমবার সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বের হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রার ব্যানারের সামনের সারিতে ছিলেন হত্যাচেষ্টা মামলার  এজাহারভুক্ত আসামি ।

কুখ্যাত ফ্যাসিষ্ট হানিফের দোসর  ওই ব্যক্তির নাম মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। তিনি কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কুষ্টিয়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছিলেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি হয়ে তিনি  দীর্ঘদিন ছিলেন পলাতক ।

এদিকে জেলা প্রশাসনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতাকে শোভাযাত্রার ব্যানারে দেখতে পেয়ে রাজনৈতিক ও সাধারণ মহলে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন নেটিজেনরা। তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কিছু জানেন না জানালেও মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম শোভাযাত্রায় উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি নিজেিই ।

জানা গেছে, আজ বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনে নানা আয়োজন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৮টায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। মজমপুরগেটসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে বনবীথিতে এসে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রার ব্যানার ধরে সামনের সারিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের সঙ্গে মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেমকেও দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোকারম হোসেন ৫ আগস্ট কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় তামজিদ হোসেন জনি নামে এক যুবককে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ নম্বর আসামি। ওই মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ। মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করা ছাড়াও আরও ৪০ থেকে ৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা ওই মামলার বাদী ভুক্তভোগীর বড় ভাই জিলহজ হোসেন।

 

কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। ছবি: স্বাধীনবাংলা নিউজ

জানতে চাইলে মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম প্রথমে মামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আজ সকালে জেলা প্রশাসনের বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলাম। হত্যাচেষ্টা  মামলার প্রমান রয়েছে জানালে  তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করতে চান। তার ছবি দিয়ে নিউজ না করার অনেুরোধ জানান।

 

কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম। ছবি: স্বাধীনবাংলা নিউজ

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সুলতান মারুফ তালহা বলেন, ‘একজন জুলাই যোদ্ধা হিসেবে আমি বলব, যারাই ফ্যাসিস্টদের সহযোগীদের নিয়ে পথ চলবে, তারাই নিন্দনীয় হবে। সে, আমি হই, ডিসি হন, বিএনপি হোক আর জামায়াত হোক।

’কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমদ বলেন বিষয়টা অতন্ত দু;খ জনক । এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে সর্তক থাকা উচিৎ ছিল । বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলবো। আমি বুঝতে পারিনা ফ্যাসিষ্টের দোসরা প্রশাসনের কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার সাহস পায় কি ভাবে ?

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার  বলেন, ‘এমনটা কেন হলো। ব্যাপারটি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলব। 

 

পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, কোনো ভাবেই আমি কিছু জানি না। এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, আমি তাকে চিনি না। খেয়ালও করিনি। তিনি মামলার আসামি হলে আমি পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলব।’