কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ, বিশেষত নিউমোনিয়ার প্রকোপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। শীতের আগমনের প্রভাবে ঠান্ডা, জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের ভিড়ে হাসপাতালের ২০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে রীতিমতো জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে ৪০০ শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে; যা ধারণক্ষমতার ২০ গুণ বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশুকে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সফুরা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে এ চাপ বেড়েই চলেছে, এবং এত বিপুলসংখ্যক রোগী সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসক-নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন।
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) মো. রকিউর রহমান বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এ বছর শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডকে শিশু ইউনিট-২ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং অন্যান্য ওয়ার্ডের মেঝেতেও শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার জানান, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে। অক্টোবরের শুরু থেকেই প্রতিদিন চার শতাধিক শিশু ভর্তি থাকছে, ফলে শয্যা ও চিকিৎসাসেবা সংকুলানে চরম সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
হাসপাতালে বর্তমানে মাত্র ৯-১০ জন চিকিৎসক এবং ৭-৯ জন নার্স প্রতি শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন; যা রোগীদের চাহিদার তুলনায় সম্পূর্ণ অপ্রতুল। রোগীর স্বজনরা জানান, পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স না থাকায় শিশুদের সঠিক চিকিৎসা পেতে দেরি হচ্ছে।
এমতাবস্থায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অতিরিক্ত চিকিৎসক ও শয্যা বরাদ্দ দিয়ে এই সংকট নিরসনের দাবি করেন কুষ্টিয়াবাসী।